আজ ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

করিমগঞ্জের হাওরের পানিতে ডুবে দুই বন্ধুর মৃত্যু 

তাসলিমা আক্তার মিতু:কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে এক বন্ধুর বিয়েতে এসে হাওরের পানিতে ডুবে রাফু (২৪) ও লিমন (২৫) নামে দুই বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪জুলাই) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণের বড় হাওরে পাঁচ বন্ধু মিলে গোসল করতে গেলে এ ঘটনাটি ঘটে। পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই বন্ধুর মধ্যে রাফু রাজধানীর তেজগাঁও পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসিন্দা কামাল দ্দিনের ছেলে এবং লিমন একই এলাকার লাল মিয়ার ছেলে। তাদের মধ্যে রাফু ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং লিমন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর বাজার এলাকার সায়েম উদ্দিনের ছেলে তৌকিরের বিয়ে ছিলো গত (৩জুলাই) সোমবার। এ উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন (২জুলাই) রোববার তার পাঁচ বন্ধু রাফু, লিমন, রাফি, জুনায়েদ ও রকি ঢাকা থেকে তৌকিরদের গ্রামের বাড়ি গুনধর বেড়াতে আসে। মঙ্গলবার (৪জুলাই)  ছিলো তৌকিরের বৌভাত অনুষ্ঠান। সকালের নাস্তা সেরে তৌকির ও তার পাঁচ বন্ধু রাফু, লিমন, রাফি, জুনায়েদ ও রকি ফুটবল খেলেন। পরে বাড়ির পাশে গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণের বড় হাওরে তারা ফুটবল নিয়েই গোসল করতে যান। গোসলের এক পর্যায়ে হাওরের ডুবো সড়ক থেকে পা পিছলে রাফু, লিমন ও তৌকির খাদে পড়ে যান। সাঁতার না জানায় কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা হাওরের পানিতে তলিয়ে যান। এ সময় অন্য তিন বন্ধু সাঁতরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া তিন বন্ধু রাফু, লিমন ও তৌকিরকে উদ্ধার করে কিন্তু ঘটনাস্থলেই লিমনের মৃত্যু হয়। এছাড়া রাফু ও তৌকির এই দুইজনকে দ্রুত কিশোরগঞ্জে আনার পর রাফুকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৌকিরকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে রাফুকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে বলে হাসপাতালটিতে নিয়ে আসা তার তিন বন্ধু রাফি, জুনায়েদ ও রকি অভিযোগ করেন। তারা বলেন, হাসপাতালে আনার পর পরই যদি রাফুকে অক্সিজেন দেওয়া হতো, তাহলে সে হয়তো বেঁচে যেতো। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফুর মৃত্যুর পর তিন বন্ধুই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এ প্রসঙ্গে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার সুমন সেন বলেন, হাসপাতালে এসে দুইজনকেই মৃত পেয়েছি। হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে এনে ভর্তি করার পর রাফু নামের একজনের মৃত্যু হয়।
করিমগঞ্জ থানার ওসি মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

Comments are closed.

     এই ক্যাটাগরিতে আরো সংবাদ